Khotna

Khotna
device circumcision

সুন্নতে খতনা নিয়ে ইসলাম এবং বিজ্ঞান কি বলেছে ?

circumcision procedure

সুন্নতে খতনা আমাদের সমাজে মুসলমানি বলেই বহুল পরিচিত। আমাদের মুসলিম সমাজে এ সংস্কৃতি শত শত বছর ধরে চলে আসছে। এটি একটি মহান সুন্নত। যুগে যুগে সকল নবী-রাসুলও এ সুন্নত পালন করেছেন।


সর্বপ্রথম এ সুন্নত পালন করেছেন হযরত  ইব্রাহিম (আ.)। হযরত  সাইদ ইবনে মুসাইয়াব (রহ.) থেকে বর্ণিত, হযরত  ইবরাহিম (আ.) হলেন খতনার সুন্নত পালনকারী সর্বপ্রথম ব্যক্তি। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস : ২৬৪৬৭)


আমাদের দেশে অনেক মা-বাবাই মনে করেন, অল্প বয়সে সন্তানের সুন্নতে খতনা করা উচিত। আবার অনেকে অভিবাবক মনে মনে করেন, একটু সময় নিয়ে সাত থেকে আট বছর বয়সে করা উচিত।

সুন্নতে খতনার সঠিক বয়স কোনটা? 

সুন্নতে খতনা বিষয়ে ডা.আসাদুজ্জামান বলেন, সুন্নতে খতনা বিষয়টা আসলে ধর্মিও যেটা আসলে সবার জন্য নয়। সুন্নতে খতনা মুসলিম কমিউনিটি করে, ইহুদিরা করে, অনেক খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীও খতনা করে।  আসল বিষয়টা হচ্ছে ধর্মিও কে কোন বয়সে খতনা করতে চান। এজন্য বয়সটা গুরুত্বপুর্ণ।


এই বিষয়ে তিনি আরও বলেন, আপনি যদি মধ্যে প্রাচ্যে যান, তবে দেখবেন খতনার শুরু সেখানে থেকে। যেটা আমাদের নবী হযরত ইব্রাহিম (আ.) শুরু করেন। কিন্তু  ইব্রাহিম (আ.)  নিজেই খতনা করেন ৮০ বছর বয়সে। সেটা সে সময়ের সেখানকার সাংস্কৃতি। সন্তান জন্মের পর  প্রথম সপ্তাহ, দ্বিতীয় সপ্তাহ, তৃতীয় সপ্তাহে বা আর কিছুদিন পরেই সেখানে খতনা করে দিবে। কিন্তু আমরা যখন এখানে করি, এখানে সেই সুযোগটা নেই। আমরা এটা চিন্তা করতে পারব না।  


আরও পড়ুন : প্রতিবন্ধী বাবুদের কিভাবে সুন্নতে খতনা করানো হয়


ইহুদিরা জন্মের প্রথম দিনই করে দেয়, দ্বিতীয় দিন করে দেয়। আমরা তা করতে পারব না। আমাদের একটা সময় দিতে হবে। সময় দিতে গেলে আমি যেটা করি, সারা দুনিয়াতে সবাই যেটা বলছেন, আগে মনে করা হতো নবজাতক ব্যথা বুঝতে পারে না। এটা ভুল তথ্য। ওদের নিউরোলজিক্যাল ডেভেলপমেন্ট পেইন সেনসেশনের জন্য হয়ে যায়। তাহলে পেইন সেনসেশন যদি মাথায় থাকে, আমি বলব কোনও কারণ যদি না থাকে তবে একটা নির্দিষ্ট বয়সে খতনা করা উচিত।


সুন্নতে খতনা নিয়ে বিজ্ঞান যা বলছে

পুরুষের খতনাকে আধুনিক স্বাস্থ্যবিজ্ঞানীরা অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত বলে মনে করেন। খতনার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ছত্রাকজাতীয়  (ব্যাকটেরিয়া) রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। খতনার প্রধান সুবিধা হলো, এর ফলে লিঙ্গের অগ্র ত্বকে যে তরল জমে নোংরা অবস্থার সৃষ্টি করে, তা থেকে রেহাই পেতে পারে। দেড় হাজার বছর আগে মহানবী (সা.) খতনার কথা বলেছেন, ব্যাপক গবেষণা শেষে আজকের আধুনিক বিজ্ঞান স্বীকার করেছে, খতনার ব্যাপক উপকারিতা আছে।


আরও পড়ুন : ডিভাইস কসমেটিক খতনা কিভাবে করা হয়


খতনার সুফল নিয়ে অস্ট্রেলীয় মেডিক্যাল সায়েন্সের অধ্যাপক ড. ব্রায়ান মরিস গবেষণা করেছেন।  তার সেই গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, যেসব বালকের সারকামসিশন (খতনা) করা হয়নি, তাদের অপেক্ষাকৃত কিডনি, মূত্রথলি ও মূত্রনালির ইনফেকশন চার থেকে ১০ গুণ বেশি হয়। তিনি মনে করেন, সারকামসিশনের (খতনা) মাধ্যমে অন্তত এক-চতুর্থাংশ মূত্রনালির ইনফেকশন হ্রাস করা যায়।


অন্যদিকে ওয়াশিংটনের সৈনিক মেডিক্যাল কলেজের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. বিজবেল খতনা নিয়ে বলেন, প্রথম দিকে আমি খতনার বিরোধী ছিলাম, পরে দীর্ঘ গবেষণার ফলে প্রমাণিত হলো যে মূত্রথলি ও মূত্রনালিবিষয়ক অনেক জটিল রোগের সমাধান হলো খতনা।  তাই আমি বলতে পারি খতনা একটি  বিজ্ঞান সম্মত পদ্ধতি।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.